বায়ুমণ্ডলে কার্বন দূষণের ফলে পৃথিবী পাঁচটি বিপর্যয়কর জলবায়ু টিপিং পয়েন্ট অতিক্রম করার দ্বারপ্রান্তে রয়েছে বলে নতুন একটি প্রতিবেদনে সতর্ক করেছেন বিশ্বের ১২০ জন বিজ্ঞানী।
এতে তারা বলেছেন, যদি পৃথিবীর গড় উষ্ণতা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হয় তবে ২০৩০ সালে আরও তিনটি দৃশ্যমান হবে।
বুধবার (৬ নভেম্বর) দুবাইতে কপ২৮ সম্মেলনে বিজ্ঞানীরা এই প্রতিবেদন তুলে ধরেন।
সম্মেলনে অংশ নেওয়া বিজ্ঞানীরা বলছেন, জীবাশ্ম জ্বালানি বিজ্ঞানভিত্তিক হ্রাস করার পরিকল্পনা করতে হবে। কার্বন নিঃসরণ ২০৩০ সালের মধ্যে ৪৫ শতাংশ কমাতে হবে।
২০৫০ সালের মধ্যে শূন্য নির্গমন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হবে। এটি লক্ষ্য অর্জন করতে পারলে বৈশ্বিক তাপমাত্রা এই শতাব্দীর শেষ নাগাদ বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে বলে বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন।
দুবাইয়ের এক্সপো সিটিতে বুধবার ষষ্ঠ দিন আলোচনা শুরুর পর বিজ্ঞানীরা জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে রেকর্ড কার্বন নির্গমনের নতুন রিপোর্ট দিয়ে সতর্ক করে দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, ফসিল ফুয়েল থেকে ২০২৩ সালে কার্বন নির্গমন নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছে।
তারা জানান, কার্বন নির্গমন পরিস্থিতি উন্নতির পরিবর্তে গত দুই বছরে আরও অবনতি হয়েছে। এই নির্গমনের পরিমাণ এবছর ৪০ দশমিক ৯ গিগা টনে গিয়ে পৌঁছাবে।
এদিন (বুধবার) ক্লাব অব রোমের ৭৫ জন বিজ্ঞানী কপ নেতাদের উদ্দেশে একটি খোলা চিঠি দিয়েছেন। তারাও কপ প্রেসিডেন্টের বক্তব্যের বিরোধিতা করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: কপ-২৮: ৫ গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা সমাধানে অন্য দেশের সঙ্গে কাজ করবে বাংলাদেশ
খোলা চিঠিতে তারা বলেছেন, জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বন্ধ ও বিজ্ঞান একে অপরের পরিপূরক। একটির সঙ্গে অন্যটি জড়িত। এ ব্যাপারে বিজ্ঞান নিয়ে সংশয়ের কোনো সুযোগ নেই। প্যারিস চুক্তির লক্ষ্য বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখতে হলে জীবাশ্ম জ্বালানি বন্ধের কোনো বিকল্প নেই। ২০৫০ সালের মধ্যে শুধু শূন্য কার্বন নির্গমন নিশ্চিত করলেই হবে না। বরং ওই সময় পর্যন্ত বিশ্বে যে কার্বন ডাই-অক্সাইড থাকবে তা শোষণ করার জন্য নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে হবে।
জীবাশ্ম জ্বালানির বিষয়ে এসব রিপোর্ট পরিবেশবাদীদের আরও ক্ষুব্ধ করে তুলেছে। তারা দিনভর জলবায়ু সম্মেলন কেন্দ্রের ভেতরে নানা স্লোগানে তাদের প্রতিবাদ জানিয়ে জলবাযু সম্মেলনের নীতি নির্ধারকদের সতর্ক করে দিয়েছে। তাদের দাবি হলো- এবারের জলবায়ু সম্মেলনেই জীবাশ্ম জ্বালানি বন্ধের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক।
আরও পড়ুন: কপ-২৮ সম্মেলনে স্থানীয় জলবায়ু নেতৃত্বে গ্লোবাল সেন্টার অন অ্যাডাপটেশন অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে বাংলাদেশ